Premier Energies IPO: আইপিও আসার খবর চাউর হতেই বাজারে রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে গেল। ক্রেতামহলের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। মুখিয়ে রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড হাউসগুলির পাশাপাশি বাজারের রাঘব বোয়ালরা। গত মার্চ মাসে শেষ হওয়া অর্থবছরের রিপোর্ট পেশ হওয়ার পরপরই সংস্থাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ব্যালেন্স শীট অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে কোম্পানির নেট মুনাফার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৩১ কোটি টাকায়। যেখানে আগের বছরে ১৪৬৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেও লোকসানের কবলে পড়তে হয়েছিল। তাই লাভবান সংস্থায় একাংশ মালিকানা অর্জনের আশায় বিনিয়োগকারীরা।
IPO টির সাবস্ক্রিপশন (Premier Energies IPO) উইন্ডো ইতিমধ্যেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ২৭ শে আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে আবেদন গ্রহণ করার কাজ। আবেদনগ্রহণ পর্ব চলবে আগস্ট মাসের ২৯ তারিখ অবধি। তারপর ‘সাবস্ক্রাইব’ করার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর ইকুইটি শেয়ার অ্যালটমেন্টের পর ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জগুলিতে লিস্টিং এর কাজ সমাপ্ত হওয়ার সাথে সাথেই সেকেন্ডারি বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের সামনে ইকুইটি শেয়ারগুলি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আইপিও বিক্রির মাধ্যমে সংস্থা ২৮৩০ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। এর মধ্যে ফ্রেস ইস্যুর মাধ্যমে ১২৯১ কোটি টাকা এবং বাকি অর্থ প্রোমোটারদের হাতে থাকা ৩.৪২ কোটি শেয়ার ‘অফার ফর সেল’-এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। সংশ্লিষ্ট আইপিওটির প্রাইস ব্যান্ড ধার্য করা হয়েছে ৪২৭ টাকা থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে।
তথ্যানুযায়ী, মোট ইক্যুইটি (Premier Energies IPO) শেয়ারের ১৫ শতাংশ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে HNI ক্যাটেগরি ভুক্ত প্রার্থীদের জন্য। পরের ৫০ শতাংশ শেয়ারে QIB অর্থাৎ কোয়ালিফাইড ইনস্টিটিউশনাল বায়ার্সরা নাম নথিভুক্ত করতে পারবে। এবং পড়ে থাকা বাকী ৩৫% শেয়ার রিটেল ইনভেস্টারদের মধ্যে বন্টন করা হবে। ৩০ শে আগস্ট এর মধ্যে বিলিবন্টন-এর কাজকর্ম সমাপ্ত যাওয়ার পর আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর NSE এবং BSE তে শেয়ারটি লিস্টিং করা হবে। জানিয়ে রাখি, আইপিও ক্রয়ের (Premier Energies IPO) ক্ষেত্রে একাধিক শেয়ার একত্রে লটের আকারে কেনার জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে লট পিছু শেয়ার রাখা হয়েছে ৩৩ টি অর্থাৎ উক্ত প্রাইসব্যান্ডের মধ্যে এক একটি লটের ন্যূনতম মূল্য গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৮৫০ টাকায়। রিটেল ইনভেস্টার হিসাবে একজন ব্যক্তি সর্বাধিক ১৩ টি লটের জন্য আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে হিসাব মতো আবেদনমূল্য গিয়ে দাঁড়াবে ১,৯৩,০৫০ টাকায়। আবেদন বাতিল হলে আইপিও বাবদ প্রদেয় অর্থমূল্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রিফান্ড করে দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২রা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তারা নির্ধারিত অর্থ ফেরত পাবেন।
সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, আইপিও বিক্রি বাবদ সংগৃহীত অর্থ কোম্পানির সাবসিডিয়ারি সংস্থায় (Premier Energy Global Environment Private Limited ) বিনিয়োগ করা হবে। তেলেঙ্গানাতে সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারি কোম্পানিটি দুটো ৪ গিগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সোলার পাওয়ার স্টেশন প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বরাদ্দকৃত অর্থ নয়া পাওয়ার স্টেশন তৈরি খাতে খরচ করা হবে। সংগৃহীত তহবিলের অবশিষ্ট অর্থ সাধারণ কর্পোরেট কাজকর্ম সম্পাদনের জন্য মজুত রাখা হবে।
প্রসঙ্গত জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প শক্তির উৎস হিসাবে সৌর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে প্রিমিয়ার এনার্জিস কোম্পানিটি (Premier Energies IPO) গত ২৯ বছর যাবৎ যথেষ্ট সুনামের সাথে কাজ করে চলেছে। প্রোমোটারদ্বয় সুরেন্দ্র পাল সিং সালুজা এবং চিরঞ্জীব সিং সালুজা-এদের হাত ধরে প্রারম্ভে একটি স্টার্ট-আপ সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু এটি।পরে এগিয়ে চলার পথে সরকারি সহযোগিতা ও নিজেদের প্রচেষ্টার উপর ভর করে বিকল্প শক্তি ক্ষেত্রে বাকিদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি। সৌর ব্যাটারি, বিভিন্ন রকম সোলার মডিউল তৈরির পাশাপাশি কোম্পানির আয়ের একটি বড় অংশ আসে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিপণন এর মাধ্যমে। কোম্পানির আতুর ঘর তেলেঙ্গানাতেই অধিকাংশ উৎপাদন ইউনিটগুলি বিদ্যমান। ব্যবসা ভালো চললেও ক্রমবর্ধমান ইনপুট খরচা বৃদ্ধির জেরে ফেলে আসা বছরগুলিতে কোম্পানি সেভাবে লাভের মুখ দেখেনি। ২০২২ ও ২০২৩ পরপর দুই অর্থবছরে আয়ের চাইতে ব্যয় বেশি হওয়ার দরুন সংস্থাকে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু কোম্পানির কর্তাব্যক্তিদের দক্ষ পরিচালনা ও নিখুঁত ব্যবসা পরিকল্পনার উপর ভর করে ২০২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৩১ কোটি টাকা লাভের মুখ দেখেছে সংস্থা। একই অর্থ বছরে ব্যবসার অংক ছিল যেখানে ৩,১৭১ কোটি টাকা। গত জুন মাসে শেষ হওয়া ত্রয়ী মাসিকে আবারও ১৯৮ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে সংশ্লিষ্ট আইপিও সংস্থাটি।
সংস্থার খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করে অধিকাংশ বাজার বিশেষজ্ঞদের তরফে IPO (Premier Energies IPO) ক্রয়ের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এছাড়া, আইপিওর মাধ্যমে স্বল্প সময়ে মোটা অংকের রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেছেন তারা । আগামী দিনে ‘সাবস্ক্রিপশন’ হার কয়েক গুণ বাড়বে বলেও তারা আশাবাদী। সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর আইপিওতে লিড ম্যানেজার হিসাবে মার্চেন্ট ব্যাংকার এর ভূমিকায় নিযুক্ত হয়েছে Kotak Mahindra Capital Company Limited, JP Morgan India Private Limited, ICICI Securities Limited. এছাড়া, রেজিস্ট্রার হিসাবে পরিষেবা প্রদান করবে Kfin Technology Limited.কিভাবে আবেদন করা যাবে:আগ্রহী উপভোক্তারা পার্সোনাল ব্যাংকিং মারফত অনলাইনে ASBA প্ল্যাটফর্মে আইপিওর জন্য আবেদন করতে পারবে। এছাড়া শেয়ার ব্রকিং সংস্থাগুলির মাধ্যমেও দরখাস্ত করা যাবে। সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরী। নিখরচায় ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে হলে এই লিংকে ক্লিক করে খুলতে পারেন।